প্রখ্যাত ব্যক্তিত্ব
আবদুর রশীদ তর্কবাগীশ সিরাজগঞ্জ জেলার উল্লাপাড়া উপজেলার তারুটিয়া গ্রামে ১৯০০ সালে জন্মগ্রহণ করেন। স্থানীয় ডায়মন্ড জুবিলী হাইস্কুলে এন্ট্রাস ক্লাসে অধ্যয়নকালে তিনি খিলাফত ও অসহযোগ আন্দোলনে (১৯২০-২২) যোগ দেন। এ সময় তিনি সভা অনুষ্ঠানের মাধ্যমে আন্দোলনের স্বপক্ষে জনমত গড়ে তোলেন এবং সলঙ্গা ঘাটে কংগ্রেসের অফিস প্রতিষ্ঠা করেন। ১৯২২ সালে তাঁর নেতৃত্বে এক কৃষক বিদ্রোগ সংঘটিত হলে তিনি গ্রেফতার হন এবং ছয় মাসের কারাদন্ডে দন্ডিত হন। তিনি উত্তর ভারতের দেওবন্দ মাদ্রাসায় শিক্ষালাভ করেন। লাহোরের এরশাদ ইসলামিয়া কলেজে বিতর্ক প্রতিযোগীতায় সেরা বাগ্মীর স্বীকৃতি লাভ করে তিনি ‘তর্কবাগীশ’ হিসেবে পরিচিতি হন। মওলানা তর্কবাগীশ ১৯৩৬ সালে মুসলিম লীগে যোগ দেন এবং ১৯৩৭ সালে বঙ্গীয় আইনসভার সদস্য নির্বাচিত হন।
১৯২৭ সালে উল্লাপাড়া থানার শোনতলা গ্রামে প্রখ্যাত আবু লোহানীর ঔরষে ফতেহ লোহানী, ফজলে লোহানী, কামাল লোহানী ও হুসনা বানু প্রমুখ প্রতিভাশালী ছেলেমেয়ে জন্মগ্রহণ করেন। বাংলাদেশের টিভি রিপোর্টার হিসেবে ফজলে লোহানীর মতো প্রতিভার সাক্ষাৎ আর কখনো মিলবে কিনা সন্দেহ আছে। ‘‘যদি কিছু মনে না করেন’’ এই শিরোনামে প্রতি মাসে পাক্ষিক দুটি টিভি রিপোর্টিং দেখার জন্য লক্ষ লক্ষ টিভি দর্শক বিপুল আগ্রহ নিয়ে অপেক্ষা করতো।
ভয়েস অব আমেরিকা ও রয়টারের জগত বিখ্যাত টিভি রিপোর্টারদের সমকক্ষ ফজলে লোহানী অপূর্ব ভঙ্গিমায় টিভি পর্দায় হাজির হয়ে দর্শকবৃন্দের বিপুল করতালির মধ্যে কখনো হাসি আনন্দ, কখনো বেদনা ভারাক্রান্ত টিভি রিপোর্টিং এর মাধ্যমে দর্শকদের মুগ্ধ করে রাখতেন। তার অপর একটি টিভি রিপোটিং বিশেষভাবে উলেখযোগ্য। মওলানা ভাসানী যখন মহীপুরে বিশাল প্রজা সম্মেলন করছিলেন, তখন ফজলে লোহানী গিয়েছিলেন সেই মহীপুরে, মওলানা ভাসানীর সাক্ষাৎকারের উপর টিভি রিপোর্টিং করবার জন্য। পরে ফজলে লোহানীর সেই রিপোর্টটি ‘মহীপুরের প্রান্তরে’ নামে পত্রিকায় প্রকাশিত হলে বিভিন্ন মহলে তা ব্যাপক আলোচনার বস্ত্ততে পরিণত হয়েছিল। তিনি ‘পেনশন’ নামে একটি ছায়াছবিরও প্রযোজনা করেন। মাত্র ৫৮ বছর বয়সে ১৯৮৫ সালে তিনি হৃদরোগে আক্রান্ত হয়ে মারা যান।
হোসেন তওফিক ইমাম ১৯৭১ সালে বৃহত্তর পার্বত্য চট্টগ্রামের ডেপুটি কমিশনারের দায়িত্ব পালনরত অবস্থায় বাংলাদেশের মহান মুক্তিযুদ্ধে অংশ গ্রহন করেন। মুক্তিযুদ্ধের প্রথমদিকে দেশের পুর্বাঞ্চলে মুক্তিযুদ্ধে এবং পরবর্তীকালে মুজিবনগর সরকারের কাজকর্ম পরিচালনায় তাঁর ভুমিকা অনন্য। বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাসে তাঁর নাম কিংবদন্তি তূল্য । তিনি এইচ,টি, ইমাম নামেই সমধিক পরিচিত ।
১৯৩৭ সালের ১৫ই জানুয়ারী তারিখে টাংগাইল শহরে তাঁর জন্ম । পিতা মরহুম তফসির উদ্দিন আহমেদ বি,এ, বি,এল, এবং মাতা মরহুম তাহসিন খাতুন । শিক্ষা জীবনের শুরু রাজশাহীতে এবং পশ্চিম বঙ্গের বাঁকুড়া ও কলকাতায় । ১৯৪৭ সালে চুয়াডাঙ্গা ভি ,জে হাই স্কুলে, ঢাকা কলেজিয়েট হাইস্কুল থেকে ১৯৫২ সালে ম্যাট্রিক, ১৯৫৪ সালে পাবনা এডওয়ার্ড কলেজ থেকে ইন্টারমিডিয়েট, ১৯৬৫ সালে রাজশাহী কলেজ থেকে অর্থনীতিতে স্নাতক এবং ১৯৫৮ সালে ঢাকা শ্ববিদ্যালয় থেকে অর্থশাস্ত্রে এম,এ, ডিগ্রী লাভ করেন । তৎকালীন নিখিল পাকিস্তানী সিভিল সার্ভিস পরীক্ষায় চতুর্থস্থান অধিকার করে তিনি ১৯৬১ সালে সিএসপি হন । এর আগে তিনি রাজশাহী সরকারী কলেজে অর্থনীতি বিভাগে লেকচারার পদে কর্মরত ছিলেন । ছাত্র অবস্থাতেই রাজনীতি সচেতন ছিলেন । তিনি ১৯৫২ সাল থেকে পূর্বপাকিস্তান ছাত্র ইউনিয়ন এবং প্রগতিশীল ছাত্র রাজনীতির সাথে সংশিষ্ট হন । ১৯৫২-৫৪ শিক্ষাবর্ষে পাবনা কলেজ ছাত্র সংসদের সাহিত্য ও সংস্কৃতি সম্পাদক, ১৯৫৪-৫৬ শিক্ষাবর্ষে রাজশাহী সরকারী কলেজ ছাত্র সংসদে সদস্য নির্বাচিত হন । ১৯৫৬-৫৭ সালে বিনাপ্রতিদ্বন্দ্বীতায় তিনি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় ছাত্র ইউনিয়নের (ডাকসুর) কমনরুম সেক্রেটারী নির্বাচিত হয়েছিলেন । ১৯৬২-৬৩ সালে তিনি রাজশাহী জেলায় অ্যাসিসটেন্ট কমিশনার, ১৯৬৩-৬৪ সালে নওগাঁর এসডিও, ১৯৬৪ সালে নারায়ণগঞ্জের এসডিও, ১৯৬৫ সালে ঢাকার অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক, ১৯৬৫-৬৭ সালে তৎকালীন পাকিস্তানের তথ্য ও বেতার মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র মন্ত্রী খাজা শাহাবুদ্দিনের একান্ত সচিব, ১৯৬৮-৬৯ সালে তৎকালীন পূর্বপাকিস্তান সরকারের অর্থ বিভাগের উপ-সচিব পদের দায়িত্ব পালন করেন । মাঝখানে ১৯৬৭-৬৮ সালে লন্ডন স্কুল অব ইকনোমিক্সে অধ্যায়ন করেন । চাকুরী জীবনে মন্ত্রিপরিষদ সচিব, সড়ক ও সড়ক পরিবহন বিভাগের সচিব, পানিং ডিভিশনের সচিব, পানিং কমিশনের সদস্য, জেলা প্রশাসক, পিএটিসির প্রকল্প পরিচালক এবং যমুনা বহুমুখী সেতু কর্তৃপক্ষের কার্য নির্বাহী পরিচালক পদের দায়িত্ব পালন করেন । ১৯৯৬-৯৭ সালে অগ্রণী ব্যাংকের পরিচালনা পর্ষদের চেয়ারম্যানও ছিলেন । বর্তমানে তিনি গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকারের মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর সংস্থাপন ও প্রশাসন বিষয়ক উপদেষ্টার দায়িত্ব পালন করছেন।
কমরেড অমূল্যনাথ লাহিড়ী
(১৮৯৮-১৯৮৬ )
অমূল্য লাহিড়ী হিসেবে উপমহাদেশের কমিউনিস্ট আন্দোলনে পরিচিত ব্যক্তিত্ব । ১৮৯৮ সালের ২১ আগস্ট, বাংলা ১৩০৫ সালের ৮ ভাদ্র (মতান্তরে ৫ ভাদ্র) তারিখে উলাপাড়া লাহিড়ী মোহনপুর গ্রামে জন্ম গ্রহন করেন। বাবা দ্বারকানাথ লাহিড়ী ব্রিটিশ সরকারের পুলিশ সার্ভিসের অফিসার ছিলেন। বিহারের দেওঘর থানার ওসি হিসেনে অবসর গ্রহণ করেন। চাকুরিসূত্রে তিনি কলকাতার বেলেঘাটায় বাড়ি করেন। সেক্ষেত্রে লাহিড়ীর শিক্ষা জীবন কলকাতাতেই শুরু হয়। মা সারদা লাহিড়ী পুলিশ অফিসারের স্ত্রী হয়েও অগ্নিযুগের বিপবী দল অনুশীলনের সদস্য ছিলেন। সেজন্য দলের অস্ত্রশস্ত্র তার কাছেই নিরাপদে গচ্ছিত রাখা হতো। শিশুকাল থেকে মায়ের সহচর্যে থেকে অনুশীলন দলের স্বাধীনতা সংগ্রামীদের সংস্পর্শে আসেন এবং অনুশীলন দলে যোগ দেন। কিশোর অমূল্য লাহিড়ী অনুশীলন দলের সংবাদ এবং অস্ত্র বাহক হিসেবে তদানন্তীন ভারতবর্ষের সবর্ত্র বিচরণ করেন। পুলিশ অফিসারের সন্তান, সুদর্শন এবং স্মার্ট হিসেবে তিনি ইংরেজদের স্পর্শকাতর স্থানগুলোতে অবাধে প্রবেশ করতে পারতেন। মাত্র ১৪ বছর বয়সে ১৯১২ খ্রিষ্টাব্দে তিনি প্রথম জেলে যান । তিনি ১৯৩৮ খ্রিষ্টাব্দে ভারতবর্ষের কমিউনিস্ট পার্টির সদস্য হন ।
লাহিড়ী মোহনপুরের বিখ্যাত জমিদার পরিবারের সন্তান হলেও তিনি ছিলেন সাধারণ গরিব কৃষকের আপনজন, আত্মপ্রচারবিমুখ সাদাসিধে, অল্পভাষী অথচ দারুণ দৃঢ়চেতা ব্যক্তিত্বের অধিকারী ।
১৯৪৬ খ্রিস্টাব্দে তেভাগা আন্দোলনে কৃষকদের সংগে জমিদারদের চুক্তি হয়। ‘দশ আনা-ছয় আনা’ নামের এ চুক্তিতে কৃষকদের পক্ষে সই করেন কৃষক মজিবর। এ আন্দোলনে কৃষকদের পক্ষে নেতৃত্ব দেন তিনি। সে সময়কালে একমাত্র লাহিড়ী মোহনপুর গ্রামেই ১৮ জন পার্টি সদস্য ছিলেন। এর মধ্যে ৮ জনই ছিলেন নারী কমরেড। এরা ছিলেন কৃষকদের ঘরের মেয়ে বৌ।
একসময় তিনি বৃহত্তর পাবনা জেলা কংগ্রেসের সভাপতির দায়িত্ব পালন করেন। ১৯৫৭ খ্রিস্টাব্দের পর থেকে স্বাধীনতার পুর্ব পর্যন্ত বৃহত্তর পাবনা জেলা ন্যাশনাল আওয়ামী পার্টির তিনি সভাপতি ছিলেন। ১৯৫৪ খিস্টাব্দে যুক্তফ্রন্টের প্রার্থী হিসেবে নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বীতা করে অল্প ভোটের ব্যবধানে কংগ্রেস প্রার্থীর কাছে তিনি হেরে যান। তাঁর উদ্যোগে ও নেতৃত্বে ১৯৬৪ খিস্টাব্দে লাহিড়ী মোহনপুরে বিশাল কৃষক সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়। লক্ষাধিক কৃষকের এ সমাবেশে মওলানা ভাসানী এবং পশ্চিম পাকিস্তানের ন্যাপ নেতা মেজর ইসহাক অংশ গ্রহন করেছিলেন। মুসলিম লীগ পুলিশের সাহায্য নিয়ে এ সমাবেশ ভেংগে দেওয়ার জন্য হামলা চালায়।
কমরেড লাহিড়ীর নেতৃত্বে কৃষক সমিতির স্বেচ্ছাসেবক বাহিনী হামলা প্রতিহত করে পুলিশদের অস্ত্রসহ আটক করে । পুলিশের সকল অস্ত্রে নিয়ন্ত্রণ নিয়ে নেন কমরেড লাহিড়ী। সমাবেশ শেষ হবার পর পুলিশের পক্ষ থেকে কোন মামলা করা হবেনা শর্তে তিনি অস্ত্র সহ উল্লাপাড়া থানার পুলিশদের মুক্তি দেন। এ অভাবিত ঘটনার প্রত্যক্ষ সাক্ষী হিসেবে সেদিন মেজর ইসহাক কৃষক সমিতির এবং ন্যাপ নেতাদের উপস্থিতিতে মন্তব্য করেছিলেন বাঙ্গালী পাকিস্তানে থাকবেনা, স্বাধীন হয়ে যাবে ।
বাংলাদেশ স্বাধীনতা সংগ্রামের সময় ৭৩ বৎসর বয়সে তিনি পায়ে হেটে সিরাজগঞ্জ থেকে ঈশ্বরদী পর্যন্ত পার্টি নেতা কর্মীদের সংগঠিত করেছেন। পরবর্তী পশ্চিম বঙ্গের করিমপুরে তিনি ন্যাপ কমিউনিস্ট পার্টি এবং ছাত্র ইউনিয়নের যৌথ গেরিলা বাহিনীর ক্যাম্প প্রতিষ্ঠা করেন এবং যুদ্ধ পরিচালনা করেন। রাজনৈতিক আন্দোলন সংগ্রামের পাশা পাশি তাঁর ছিল অসাধারণ সামরিক জ্ঞান।
আমৃত্য তিনি ছিলেন বৃহত্তর পাবনা জেলার কমিউনিস্ট পার্টির সম্পাদক। বৃটিশ,পাকিস্তান এবং বাংলাদেশে মোট ৩০ বছর জেলে অতিবাহিত এবং ২০ বছর আত্নগোপন জীবন যাপন করেছেন। গৌরবময় বিপবী জীবনের অধিকারী কমরেড অমূল্যনাথ লাহিড়ী ১৯৮৬ খ্রিস্টাব্দে ২৪ আগষ্ট পরলোক গমন করেন।
সিরাজগঞ্জ থানার কাওয়াকোলা গ্রামে আবু লোহানীর আদি বাসস্থান ছিল। কিন্তু যমুনার ভাঙ্গনে কাওয়াকোলা নিশ্চিহ্ন হয়ে গেলে উল্লাপাড়া থানার শোনতলা গ্রামে তারা বসতি স্থাপন করেন। আবু লোহানী -এর বড় ছেলে ফতেহ লোহানী একাধারে সাহিত্যিক, সাংবাদিক, চলচ্চিত্র প্রযোজক, পরিচালক, অভিনেতা, নাট্যাভিনেতা ও ঢাকা বেতার কেন্দ্রের নিয়মিত কথিকা লেখক ছিলেন।ফতেহ লোহানী কলকাতার নাট্যাঙ্গনে অভিনয় করেছেন এবং ‘কিরণ কুমার’ ছদ্ম নাম নিয়ে চলচ্চিত্রেও অভিনয় করেছেন। সাবেক পূর্ব পাকিস্তানে আব্দুল জববার খানের পাশাপাশি ফতেহ লোহানীও চলচ্চিত্রের গোড়াপত্তনে উলেখযোগ্য ভূমিকা রেখেছেন। ফতেহ লোহানীর পরিচালিত ‘আসিয়া’ ছায়াছবিটি রাষ্ট্রীয় পুরষ্কারে ভূষিত হয়েছিল। ফতেহ লোহানীর কবিতা ছিল খুবই হৃদয়গ্রাহী। তাঁর সম্পাদিত ‘অগত্যা’ সাহিত্য মাসিকটি অল্প দিনের মধ্যে দেশব্যাপী পরিচিত হয়ে উঠে।
মওলানা আকরম খাঁর মাসিক ‘মোহাম্মদী’, কবি আবদুল কাদিরের সরকারী মাসিক পত্রিকা ‘মাহে-নও’ ইত্যাদির পাশে ফতেহ লোহানীর মাসিক ‘অগত্যা’ সম্পূর্ণ আলাদা ইমেজ নিয়ে পাঠক মহলে আলোড়ন সৃষ্টি করেছিল। তবে ফতেহ লোহানীর কোন বই প্রকাশিত হয়নি।
এ্যাডঃ দবির উদ্দিন আহমেদ
এ্যাডঃ দবির উদ্দিন আহমেদ, পিতাঃ মরহুম সামাতুল্যা আকন্দ ১৯২৭ সনের ১ নভেম্বর উল্লাপাড়া উপজেলার বাংগালা গ্রামে জন্ম গ্রহন করেন। ১৯৫৭ সনে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে আইন বিষয়ে স্নাতক ডিগ্রী অর্জন করে সিরাজগঞ্জ জেলায় আইন ব্যবসা শুরু করেন। ১৯৪৮ সালে বিএল ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে অধ্যয়ন অবস্থায় ভাষা আন্দোলনে বলিষ্ট ভূমিকা রাখেন। ১৯৫৬ সালে আওয়ামীলীগে যোগদান করেন। ১৯৭৩ সালে স্বাধীন বাংলাদেশের প্রথম জাতীয় সংসদ নির্বাচনে উলাপাড়ার প্রার্থী হিসাবে নির্বাচিত হন। বাংলাদেশের মহান স্বাধীনতা যুদ্ধ চলাকলীন সময়ে তিনি স্থানীয় যুবকদের সংঘটিত করে ভারতে প্রেরন ও প্রশিক্ষনের ব্যবস্থা গ্রহন করেন। উলাপাড়া, তাড়াশ ও ফরিদপুর থানার মুক্তিযুদ্ধের সংগঠক হিসাবে দায়িত্ব পালন করেন।
স্বাধীন বাংলাদেশে খাদ্য সংকট দুর করতে সমবায় ভিত্তিক ইরি ধান চাষের জন্য কৃষকদের সংগঠিত করে ইরি চাষে উদ্বুদ্ধ করেন। বি.এ.ডি.সি কে সংগঠিত করেন। গাভী পালনে কৃষকদের আগ্রহী করতে দুগ্ধ উৎপাদন সমবায় সমিতি প্রচলন ঘটান।
তিনি ১৯৯৬ সালের ২ জুন পরলোক গমন করেন।
আব্দুল লতিফ মির্জা
আলহাজ্ব আব্দুল লুতিফ মির্জা, পিতাঃ মরহুম মেনহাজ উদ্দিন মির্জুন ১৯৪৭ সালের ২৫ জুন উলাপাড়ার বংকিরাট গ্রামে জন্ম গ্রহন করেন। তিনি ১৯৬৮ সনে সিরাজগঞ্জ ডিগ্রী কলেজ থেকে স্নাতক ডিগ্রী অর্জন করেন। প্রথিতযশা রাজনীতিবিদ ১৯৬২ সালের শিক্ষা আন্দোলন, ১৯৬৬ এর ৬ দফা আন্দোলন, ১৯৬৯ এর ১১ দফা আন্দোলন এবং ১৯৭০ এর নির্বাচনে তিনি গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেন। তিনি ১৯৭৯ ও ১৯৯৬ সালে পর পর দুইবার জাতীয় সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন। এসময় তিনি বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠান নির্মানসহ উল্লাপাড়া উপজেলার সার্বিক উন্নয়নে তাৎপর্যপূর্ণ অবদান রাখেন।
এ অঞ্চলের অত্যন্ত জনপ্রীয় এই রাজনীতিবিদ ১৯৭১-এর স্বাধীনতা যুদ্ধে প্রায় ১০ হাজার মুক্তিযোদ্ধা নিয়ে ‘‘পলাশ ডাঙ্গা’’ যুব শিবির নামে একটি গেরিলা সংগঠন গড়ে তোলেন। তাড়াশের নওগা যুদ্ধসহ মুক্তিযুদ্ধের সময় বৃহত্তর পাবনা জেলার বিভিন্ন অঞ্চলে পাক-বাহিনীর বিরুদ্ধে তার নেতৃত্বে ‘‘পলাশ ডাঙ্গা’’ যুব শিবির এর মুক্তি যোদ্ধারা প্রবল প্রতিরোধ গড়ে তোলে। তিনি ২০০৭ সালের ৫ নভেম্বর পরলোক গমন করেন।
..
পরিকল্পনা ও বাস্তবায়নে: মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ, এটুআই, বিসিসি, ডিওআইসিটি ও বেসিস